নিজের কথা বলার জন্য লেখক উৎসাহী কোনোদিনই ছিলেন না।
কিন্তু পড়ে থাকা গড়িয়ে যাওয়া কথাগুলি ক্রমশ ঘন কাশবনের গভীরে একটি শরীর হয়ে উঠেছে। কথা কখনো কখনো খেলনা হয়ে ওঠে, বিবর্ণ কাঠের ঘোড়া, আবার অনুশোচনার গভীরে দীর্ঘশ্বাস হয়ে ওঠে। ভাঙাচোরা মূর্তির মতো, বুনো ছায়ার অন্তরালে থেকে যাওয়া অনেক কথাই মরা শামুকের খোল হয়ে উঠেছে। তার ওপরে শুকনো কাদা লেগেছে, স্মৃতিসন্ধ্যার চোরামেঘ হয়ে এসেছে।
চারদিকে ছড়ানো লালমাটির নুড়ির মধ্যে কথাগুলি অনাপ্লুত এক ভাস্কর্য।
কিছু কথা ভোরের পাখির মতো সত্য হয়, এই পড়ে পাওয়া জীবনে তা অস্বীকার করি কী করে? স্মৃতিকথার সাথে একঝাঁক ছাতারে উড়ে আসার দৃশ্যকে মেলাতে গিয়ে দেখি, সবটাই বাতাসে উড়ে যাওয়া খইয়ের মতো লুটোচ্ছে বসতখানার উঠোন জুড়ে।
কিছু কথা তুলে নিলে, অনেক কথাই আবার যেমন থেকে যায়, কৃষিজমি কর্ষণের মতো শুধু কল্পনা একটি অভ্যাস, আত্মকথাকে ক্রমশ উর্বর করে তোলে।
যতই অতীতের দিকে তাকাই, স্মৃতিগুলি অনেকটা জলের ওপরে খেয়ার লগির দাগ কেটে যাওয়া যেন। প্রথমে আলো, তারপরে অনেক ছায়ার দাগ, সেইসঙ্গে ছেলেবেলার শরীরের গন্ধ, দুধের বাটিতে লাল পিঁপড়ের সমাহার। পিতলের বা কাঁসার বড়ো থালা জুড়ে ডাল-ভাতের পুকুর, পাশে কাঠের টুকরোর মতো শক্ত উপাদান ও ঘামে ভেজা লোনা, সাদা ফতুয়ার পকেট জুড়ে ঋতুফল জামের বেগুনি কষ্টা দাগ, ভাঙা স্লেটের ওপরে খড়িমাটির দাগ, পাগলা কুকুরের তলপেটে কার্তুজের ক্ষত, কানের লতিতে বাবার মলে দেওয়ার যন্ত্রণার রেশ।
অনিয়মিত কথা টোকা দিয়ে যায়। পরের পর কথাগুলিকে রেখে যাই। খাটাস, সাদা ও বাদামি খরগোশ, গোখরো, কাশবন, সামরিক বাহিনীর তাঁবু বা টিনে মোড়া ছাউনি, রাইফেলধারী সৈনিক, আর পুজোর উপহার ফ্লেক্স কোম্পানির বাদামি চামড়ার নতুন জুতোর গন্ধ।”কথাসাহিত্যিক শুভংকর গুহ-র আত্মকথা ‘কাশবনের ভাস্কর্য’ শুরু হচ্ছে এভাবেই। তাঁর কথাসাহিত্য, তাঁর জীবন এবং যাপনের অনুষঙ্গগুলি পরিষ্কার করে দেয় চিন্তাভাবনার পথ। পাঠকের মনকে অনেকটাই দিশা দেখাবে তাঁর কথাসাহিত্য পাঠের ক্ষেত্রে। পাঠক সংগ্রহ করুন এই সময়ের উল্লেখযোগ্য কথাসাহিত্যিক শুভংকর গুহ-র আত্মকথা ‘কাশবনের ভাস্কর্য’।
কাশবনের ভাস্কর্য
লেখক : শুভংকর গুহ
প্রকাশনা : তবুও প্রয়াস
ধারা : স্মৃতিকথন
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩২০
বাধাই : হার্ডকভার
top of page
₹500.00 Regular Price
₹425.00Sale Price
Related Products
bottom of page

















