'রাস্তার আলোটা যেভাবে পড়েছে তাতে ওর নিচে দাঁড়ালে মনে হবে কোনও ইচ্ছাকৃত স্পটলাইটের নিচে দাঁড়িয়ে পড়েছে পাঞ্চালী। হ্যাঁ পাঞ্চালী দাঁড়িয়ে পড়েছে। স্কিন কালারের লেগিংসে ঢাকা একটা পা ছুঁড়ে দিয়েছে নাচের ভঙ্গিমায়। দুলে দুলে উঠছে তার শরীর, অজানা সুরের মূর্ছনায় সে নেচে চলেছে।ক্রমশ তার শরীরে ফুটে ওঠে ব্যালে ডান্সারের দক্ষতা। সমস্ত সংলাপ ভুলে গিয়ে সে শুধুই নেচে চলেছে। ক্লান্তি তাকে ছিঁড়ে নিচ্ছে নিংড়ে নিচ্ছে তবুও সে রাজহাঁসের মত ভঙ্গিমায় পাগলের নাচ নেচে চলেছে। আরও তিনটি অলৌকিক আলো তার মুখ ও শরীর চুঁইয়ে রাস্তায় গড়িয়ে যাচ্ছে,গড়িয়ে যাচ্ছে হাইড্রেন ও সংলগ্ন বস্তি অঞ্চলে। এত রাজকীয় নাচের তালে তালে সে ঢুকে পড়ে এক বাগান চাপা দেওয়া ঘুপচি বাড়ির দেওয়ালে। ভয়ে পায়ের পাতা ঠান্ডা হয়ে আসে তবু সে থামতে পারে না। মাদকের ঘোরের মত কোনও এক ডাক তাকে টেনে টেনে নিয়ে যায় আরও গভীর গভীর কালোর দিকে। দু হাতে চাপ চাপ কালো মাটি আর শ্যাওলা উঠে আসে।পিছনে উড়তে থাকে পেন্সিল স্কেচের সবকটি মুখাবয়ব। ঠান্ডা জলের ওপর পা হড়কে সে গিয়ে পড়ে কোনও এক প্রাচীন দেওয়ালের কাছে। দেওয়ালে শ্যাওলা,কালো ছোপ - প্রতিটি ইঞ্চিতে তার পরিত্যক্ত হওয়ার ক্ষত আর ক্ষোভ।সে চকচকে পাঞ্চালীকে দেখে হাট করে খুলে দেয় তার আগল,যতকিছু রক্ষণশীল আবেগ। গড়াতে গড়াতে আরও কতদূর চলে গিয়ে পাঞ্চালী টের পায় তার যোনি বরাবর একটা চওড়া রাস্তা চলে গেছে। সেই রাস্তার মুখে অনেক লোকের ভিড়, কোলাহল, গুজবের মত ফেঁপে উঠেছে তার শ্যাম্পু করা কোঁকড়ানো চুল। হঠাৎই চারজন লোক একসাথে হেঁটে গেল। কয়েকজন একা একা। এ রাস্তা যেখানে শেষ সেখানে কি মাটির কোনও ঘর আছে? অথবা কোনও নিরাপদ সুড়ঙ্গ? লোকগুলো গজগজ করতে করতে হেঁটে যায় আরও বেশি গুজব ফেঁপে ওঠে। পাঞ্চালীর পেটের ভেতর হঠাৎই যেন সব গুলিয়ে আসে। সমস্তটা ছিঁড়ে গলায় উঠে এলে আলোতে বমনদৃশ্য মায়াতাড়িত মনে হয় কুকুর -কুকুরীদের। লটকানো নিচু ঘাড়ের পেছনে অগুনতি পেন্সিল স্কেচ ঝোলে, নিজস্ব নিয়মে উড়ে যায়...'
সমস্ত বিড়াল সম্পর্কে সত্যি
Samasta Biral Samporke Satyi
Samasta Biral Samporke Satyi - Subhra Mukherjee
শুভ্রা মুখার্জী

















